কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসাবে কি ভাইরাল হবেন, না হারিয়ে যাবেন? (এই ৩ প্রশ্ন নিজেকে করুন)

 আমি আমার জীবনের দুইটা বছর কন্টেন্ট ক্রিয়েশন করতে গিয়ে নষ্ট করেছি। কেবল একটার পর একটা ভিডিও বানিয়েছি, কিন্তু তাতে নিজের স্কিল বা অডিয়েন্স দুটোই বাড়েনি। কিন্তু একটা মুহূর্তে আমি এমন একটা জিনিস শিখলাম, যেটা আমার পুরো কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে জার্নিটাই বদলে দিল। এখন আমি নিয়মিত ভাইরাল ভিডিও বানাতে পারি কারণ আমি জানি "কেন এবং কাদের" কন্টেন্ট বানানো উচিত।



২০২৫ সালে কি সবাই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হওয়া উচিত?

আজকের দিনে সবাই বলছে, “কন্টেন্ট বানাও”, “রিল করো”, “ইউটিউবে এসো”। অনলাইনে এখন ৫০ মিলিয়নেরও বেশি কন্টেন্ট ক্রিয়েটর! কিন্তু জানেন কি? এদের মধ্যে প্রায় ৩৯ মিলিয়ন মানুষ ভুলভাবে কন্টেন্ট তৈরি করছে। তারা শুধু অন্যকে দেখে নামছে এই দুনিয়ায়—কোনো ক্লিয়ার উদ্দেশ্য ছাড়াই।

তাই কন্টেন্ট ক্রিয়েশন শুরু করার আগে এই প্রশ্নটা করা জরুরি: আপনি কি সেই ১১ মিলিয়নের একজন হতে পারবেন, যারা কন্টেন্ট দিয়ে সত্যিই কিছু বদলাতে চায়?

কাদের উচিত কন্টেন্ট বানানো?

নিচের এই তিন ধরনের মানুষ অবশ্যই কন্টেন্ট বানানো শুরু করা উচিত আজই:

১. আপনি যদি আগে থেকেই কোনো সমস্যার সমাধান করে থাকেন

যেমন:

  • অফিসে সহকর্মীদের এক্সেল শেখান

  • বন্ধুদের মেকআপ বা স্কিন কেয়ার টিপস দেন

  • গেম খেলায় ট্রিক বা স্ট্র্যাটেজি শেয়ার করেন

  • আপনার জানা ট্রেডিং স্কিল বন্ধুদের শেখান

আপনি হয়তো এখনো জানেন না, কিন্তু আপনি একটা সোনার খনির উপর বসে আছেন। যেটা আপনি ফ্রিতে করছেন, সেটাই যদি কন্টেন্টে পরিণত করেন, সেটা অডিয়েন্স, ইনকাম ও ইমপ্যাক্ট সব কিছুই আনবে।

২. আপনি যদি নতুন কিছু শিখছেন

আমরা প্রায় সবাই ভাবি, আগে এক্সপার্ট হতে হবে, তারপর শেখানো যাবে। কিন্তু আসলে, আপনি যেই শেখার পথে আছেন, সেই পথটাই কন্টেন্ট

মানুষ এখন এক্সপার্টের থেকেও লার্নারদের ওপর বেশি ভরসা করে। কারণ তারা রিলেট করতে পারে।
একটা স্কেলে যদি আপনি ৫ বা ৬ হন, তাহলে সেই স্কিলে যারা একদম জিরো থেকে শুরু করছে, তারা আপনার কথা শুনবে মন দিয়ে।

৩. আপনি যদি আইডিয়া কানেক্ট করতে পারেন

আপনি যদি জটিল কনসেপ্ট সহজে ব্যাখ্যা করতে পারেন, একটার সাথে আরেকটা নতুনভাবে যুক্ত করতে পারেন, অন্যদের বোঝার মতো করে বলেন তাহলে বুঝে নিন, আপনার কাছে সবচেয়ে দামি কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের সুপারপাওয়ার আছে

তাহলে কাদের উচিত না?

যদি আপনি ভাবেন:

  • “আমি তেমন ক্রিয়েটিভ না”

  • “আমার বয়স হয়ে গেছে”

  • “আমার টপিক স্যাচুরেটেড”

  • “আমি এখনো জানি না সব কিছু”

তাহলে আপনার জানার দরকার: ৮৩% সফল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সেই টপিক দিয়ে শুরু করেনি, যেটা এখন তাদের মূল কন্টেন্ট

শুরুতেই ফুল এক্সপার্ট হতে হয় না। আমি নিজেও শুরুর সময়টা শুধু শিখেই গিয়েছি, ভিডিও করিনি। মনে করতাম, “আরো শিখি তারপর করবো”। কিন্তু এটাই ছিল সবচেয়ে বড় ভুল।

আসল রহস্য: শিখতে শিখতেই শেখানো যায়

যেই জিনিসটা আমার কন্টেন্টের জার্নিটা পালটে দিয়েছে, সেটা হলো: আমি বুঝে গেছি, এক্সপার্ট হওয়ার আগে শুরু করাই সবচেয়ে দরকারি

কারণ আপনি যখন “লার্নার মাইন্ডসেট” নিয়ে থাকবেন, আপনি কখনোই ভাববেন না যে “আমি জানি সব কিছু”, আপনি সবসময় শিখতে চাইবেন। আর এই লার্নিং জার্নিই মানুষকে আপনার সাথে কানেক্ট করাবে।

শেষ কথা

কন্টেন্ট ক্রিয়েশন এখন আর শুধু ভিডিও বানানোর নাম না এটা হচ্ছে একটা কমিউনিটি তৈরি করার সুযোগ, একটা আইডিয়া ছড়িয়ে দেওয়ার শক্তি, আর নিজের শেখাকে অন্যদের শেখানোর পথ

তাই আপনি যদি আজ এই তিনটা শর্তের যেকোনো একটাতে পড়েন, তাহলে দেরি না করে শুরু করে দিন। কারণ আপনার শেখা, আপনার গল্প, আপনার ভয় সবই কাউকে না কাউকে সাহস দিতে পারে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url